খাসখবর নিজস্ব প্রতিবেদন : চট্টগ্রাম নগরীর বাসস্ট্যান্ড গুলোতে দুদিন আগের সেই দুর্ভোগের চিত্রটি দেখা মেলেনি আর। কাঙ্কিত একটি বাস দেখলেই হুমড়ি খেয়ে পড়া, গাদাগাদি করে বাসে উঠা, আবার তীব্র গরমে অতিষ্ঠ মন নিয়ে বাসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা করার চিত্রটিও বদলে গেছে বুধবার।
লকডাউন ঘোষণার দুইদিন পর ফের গণপরিবহন চালু করা হলে ফিরে আসে নগরির পুরনো রুপ। কোথাও কোথাও দেখা গেছে যানজটও।
নগরীর বিভিন্ন সড়কেই বুধবার (৭ এপ্রিল) সকাল ১১টার পর থেকে দেখা গেছে যাত্রীর তুলনায় গণপরিবহনের সংখ্যা বেশি। দুর্ভোগ কমেছে অফিসগামী যাত্রীদের চিন্তা বেড়েছে চালক-হেলপারদের।
স্বাভাবিক সময়ের চাইতেও লকডাউনের এ সময়ে বাড়তি ভাড়া দিয়েও স্বস্থির ঢেঁকু তুলছেন অনেক যাত্রী। দ্বিতীয় দফা লকডাউনের তৃতীয় দিন নগরীর সিটি কলেজ মোড়ে কথা হয় আবেদা,পপি, আঁখি ও চন্দ্রিকার সাথে।
তারা জানিয়েছে গত দুদিন গণপরিবহণের অভাব ফিল করেছি। চরম দুর্ভোগে পড়েছিলাম। অনেক টাকা দিয়েও গণপরিবহণে উঠতে পারিনি।
আজ এ সংকট কেটে গেছে, তাই দ্বিগুন ভাড়া নিলেও সঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌছাতে পারছি। তাছাড়া গণপরিবহণ সংকটে ধাক্কাধাক্কি ও গাদাগাদিতে গত দুদিন করোনার যে ভয়টা ছিল তা আজ অনেকটা কমে এসেছে।
গণপরিবহন চালু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন নগরবাসী। মিল্টন তালুকদার নামে এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ির সাথে কথা হলে তিনি জানান, সিটিতে গণপরিবহণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় সরকারকে অশেষ ধন্যবাদ। গত দুদিন রাস্তায় গণপরিবহণ সংকটে যে কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে তা লাঘব হয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরি ২ নন্বর গেইট, জিইসি, বহদ্দারহাট, নতুনব্রীজ, নিউ মার্কেট ও আগ্রাবাদসহ বেশ কটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ গণপরিবহণে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই বললেই চলে।
অর্ধেক যাত্রী নিয়ে পরিবহন চলতে দেখা গেলেও এখনো অনেক চালক-হেলপাররা মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। মাস্ক পরার বিষয়েই নানা অজুহাত পরিবহন সংশ্লিষ্টদের।
তবে সাধারণ যাত্রীদের মাঝে আগের তুলনায় মাস্ক পরিধানে সচেতন বেড়েছে বহুগুন। অবশ্য গাড়ী ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানোর নির্দেশনা থাকলেও দিগুণ বা তার চেয়েও বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে বরাবরের মতোই।
শাকিল আহমেদ নামে এক যাত্রী অভিযোগের তীর ছুঁড়েন চালক হেলপারের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন করোনা থেকে বাঁচতেই এত কষ্ট করছি। বাড়তি ভাড়ার চাপ সহ্য করছি। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি না মানা,মাস্ত না পড়াসহ চালক হেলপারদের অসচেতনতায় করোনার ভয় থেকে যাচ্ছে।
কয়েকজন চালক ও হেলপারের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রথমবার লকডাউনের সময় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,ব্যাক্তি উদ্দ্যেগে এবং পরিবহণ মালিকের পক্ষ থেকে হ্যান্ড স্যানিটাইজারসহ করোনা সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন সরঞ্জাম দিয়েছিল। কিন্তু এবার কারো পক্ষ থেকে এসব কিছু না পাওয়ায় মানতে পারছি না।
অন্যদিকে সাধারণ মানুষকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য সরকার কঠোর নির্দেশনা জারি করলেও অধিকাংশই তা কর্ণপাত করেনি। ফলে মানুষজন লকডাউনে জরুরী প্রয়োজন ছাড়াই নগরীতে বের হয়ে চলছেন সাধারণ সময়ের মতো। তবে দূরপাল্লার বাসও চলাচল করছে সীমিত আকারে।
এদিকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে, মাস্ক পরিধানে আগ্রহ বাড়াতে এবং অতিরিক্ত যাত্রী তোলা বন্ধ করতে চালক হেলপারদের কঠোর নজরদারিতে রেখেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের একাধিক টিম। প্রায় গুরুত্বপূর্ণ মোড়েই তারা সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান নিয়ে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করছে।
খখ/প্রিন্স