চট্টগ্রামের ১৬ আসনে নৌকা জিতেছে ১২টিতে, স্বতন্ত্র ৩টি ও লাঙল ১টি

খাসখবর চট্টগ্রাম ডেস্ক: চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলার ১৬টি আসনে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের ১২ জন প্রার্থী। এছাড়া ঈগল প্রতীকে ২টি, লাঙল প্রতীকে ১টি, কেটলি প্রতীকের প্রার্থী ১টি আসনে জয়লাভ করেছে। এর মধ্যে পাঁচজন নতুন মুখ সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

thai foods

চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) বিজয়ী হয়েছেন মাহবুব উর রহমান (নৌকা)। ১০৬টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৬৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীন (ঈগল)। ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫২ হাজার ৯৯৫ ভোট।

চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) বিজয়ী হয়েছেন খাদিজাতুল আনোয়ার সনি (নৌকা)। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ১ হাজার ৭৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সদ্য পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা হোসাইন মুহাম্মদ আবু তৈয়ব।তরমুজ প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৭৮৪ ভোট।

চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) বিজয়ী হয়েছেন মাহফুজুর রহমান মিতা (নৌকা)। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৭৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী। ঈগল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ২৮ হাজার ৭০ ভোট।

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড -নগর আংশিক) বিজয়ী হয়েছেন এসএম আল মামুন (নৌকা)। ১২৪টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৪২ হাজার ৭০৮ ভোট। এই আসনেও তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গল প্রতীকের দিদারুল কবির পেয়েছেন মাত্র ৪ হাজার ৮৮০ ভোট।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী-নগর আংশিক) বিজয়ী হয়েছেন ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ (লাঙল)। আওয়ামী লীগের সমর্থনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৫০ হাজার ৯৭৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী। কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫১ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের প্রার্থী এম এ সালামের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সেখানে সমর্থন দেওয়া হয় ব্যারিস্টার আনিসকে।

চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের সমর্থনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে তিনি পেয়েছেন ৫০ হাজার ৯৭৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ নেতা মুহাম্মদ শাহজাহান চৌধুরী। কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৬ হাজার ২৫১ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের প্রার্থী এম এ সালামের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সেখানে সমর্থন দেওয়া হয় ব্যারিস্টার আনিসকে।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) বিজয়ী হয়েছেন এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী (নৌকা)। ৯৫টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭২ ভোট। এই আসনে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম (ট্রাক) পেয়েছেন ৩ হাজার ১৫৯ ভোট।

চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ৯৫টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ২ লাখ ২১ হাজার ৫৭২ ভোট। এই আসনে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী শফিউল আজম (ট্রাক) পেয়েছেন ৩ হাজার ১৫৯ ভোট।

চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে বিজয়ী হয়েছেন ড. মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ (নৌকা)। ১০৩টি ভোট কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৯৮ হাজার ৯৭৬ ভোট। রাউজানের মতো এই আসনেও তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই হয়নি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ফ্রন্টের প্রার্থী এডভোকেট ইকবাল হাছান পেয়েছেন ৯ হাজার ৩০১ ভোট।

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-নগর আংশিক) বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুচ ছালাম (কেটলি)।
১৫২টি ভোট কেন্দ্রে কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২৬৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর বিজয় কুমার চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫০০ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সেখানে সমর্থন দেওয়া হয় চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠকে।

চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সিডিএর সাবেক চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১৫২টি ভোট কেন্দ্রে কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২৬৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর বিজয় কুমার চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ৪১ হাজার ৫০০ ভোট। এই আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় সিদ্ধান্তে তাদের প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য নোমান আল মাহমুদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে সেখানে সমর্থন দেওয়া হয় চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠকে।

চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালী-বাকলিয়া) আসনে বিজয়ী হয়েছেন ব্যরিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী (নৌকা)।
নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৯৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীকের সানজীদ রশীদ চৌধুরী পেয়েছেন ১ হাজার ৯৮২ ভোট।

চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং-পাহাড়তলী) আসনে বিজয়ী হয়েছেন মো. মহিউদ্দিন বাচ্চু (নৌকা)। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫৯ হাজার ২৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সিটি মেয়র মনজুর আলম। ফুলকপি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ৫৩৫ ভোট।

চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনে বিজয়ী হয়েছেন এম আবদুল লতিফ (নৌকা)। ১৫২টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫১ হাজার ৪৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন। কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৫২৫ ভোট।

চট্টগ্রাম-১১ আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ প্রার্থী এম এ লতিফ বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। ১৫২টি ভোট কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৫১ হাজার ৪৯৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর জিয়াউল হক সুমন। কেটলি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৪৬ হাজার ৫২৫ ভোট।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে বিজয়ী হয়েছেন মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা)। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৩১৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৩৫ হাজার ২৪০ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে বিজয়ী হয়েছেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ (নৌকা)।
নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১ লাখ ৮৭ হাজার ৯২৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী ফ্রন্টের মো. আবুল হোসেন (মোমবাতি)। তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ১৪১ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) আসনে বিজয়ী হয়েছেন মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী (নৌকা)। নৌকা প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ১৯ হাজার ৬৫৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ আবদুল জব্বার চৌধুরী (ট্রাক)। ট্রাক প্রতীকে তিনি পেয়েছেন মোহাম্মদ আবদুল জব্বার ১২ হাজার ৮৬২ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে বিজয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মোতালেব (ঈগল)। ১৫৭টি ভোট কেন্দ্রে ঈগল প্রতীকে তিনি পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৬২৮ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন (নৌকা)। তিনি পেয়েছেন ৩৯ হাজার ২৫২ ভোট।

চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে  বিজয়ী হয়েছেন ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান সিআইপি। ১১৪টি কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন ৫৭ হাজার ৪৯৯ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল্লাহ কবির (ট্রাক)। আবদুল্লাহ কবির লিটন পেয়েছেন ৩২ হাজার ২২০ ভোট।

এ আসনে মুজিবুর রহমান সিআইপির নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। তিনি ৩৬ হাজার ৯৬৮ ভোট পেলেও ভোট শেষের আগমুহূর্তে মোস্তাফিজের প্রার্থিতা বাতিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

খখ/মো মি

আগেট্রাকের কাছে হারলেন নৌকার প্রার্থী ৩ বারের এমপি সংগীতশিল্পী মমতাজ বেগম
পরেদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৮ আসনের ২২৪টিতেই জিতলো নৌকা, ৬০টিতে স্বতন্ত্র ও ১১টিতে জাতীয় পার্টি