“আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়”-পররাষ্ট্রমন্ত্রী

খাসখবর রাজনীতি ডেস্ক: মিয়ানমারের আর কোনো রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে গ্রহণ করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

thai foods

একইসঙ্গে তিনি মিয়ানমারে আর এমন পরিস্থিতি তৈরি হবে না বলেও আশা প্রকাশ করেছেন।

শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর সিআরবির শিরীষতলায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আয়োজিত বইমেলায় অংশ নেয়ার পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এদিন তিনি চসিকের ‘মহান একুশে স্মারক সম্মাননা পদক’ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সম্ভাব্য অভিযানের মুখে অনেক রোহিঙ্গা সীমান্তে অবস্থান নিয়েছে, সরকার এই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রাখাইনে অভিযান পরিচালনা করাটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। কিন্তু সেখানে যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আমাদের এখানে উত্তেজনা ইতোপূর্বে তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে মর্টারশেল আমাদের দেশে এসে পড়েছে এবং দু’জন নিহত হয়েছে। ৩৩০ জনের মতো তাদের সেনা ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য আমাদের দেশে এসেছিল, তাদের আবার ফেরত নিয়ে গেছে।’

‘মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে সেটির প্রতিবাদ আমরা জানিয়েছি। সুতরাং আমরা আশা করব ইতোপূর্বে যে ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল সেই পরিস্থিতির আবার উদ্ভব হবে না।’

রোহিঙ্গাদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের পক্ষে আর কোনো রোহিঙ্গাকে গ্রহণ কিংবা আশ্রয় দেওয়া সম্ভব নয়। আমাদের দেশে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আমরা আশ্রয় দিয়েছি। প্রতিবছর ৩৫ হাজার নতুন রোহিঙ্গা শিশু জন্মগ্রহণ করে। প্রতিবছর এই সংখ্যাটা বেড়েই চলছে।’

‘যাদের ইতোপূর্বে মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে, তাদের কীভাবে ফেরত পাঠানো যায় আমরা সেটি নিয়েই কাজ করছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কয়েকটি রাষ্ট্রের সহায়তা কামনা করেছি, যাতে রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে মিয়ানমারের সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করা হয়। ভারত, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীনসহ বিভিন্ন দেশের সাথে আমরা আলাপ আলোচনা করেছি।’

জার্মানির মিউনিখে অনুষ্ঠিত সিকিউরিটি কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রীর যোগদানের প্রসঙ্গ টেনে মন্ত্রী বলেন, ‘সেখানেও আমরা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সাথে আলোচনা করেছি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের যে প্রতিনিধি দল আসছে, এটি আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীরতর করার ক্ষেত্রে সহায়ক। সেখানে নিশ্চিতভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আমরা আলোচনা করব।’

এর আগে, পদক প্রদান অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করার পর সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রথম যে ১০ দফা দেয়া হয়েছিল, সেই ১০ দফার মধ্যে অন্যতম ছিল বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করতে হবে। সেই ১০ দফার ভিত্তিতে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে তরুণ নেতা শেখ মুজিবসহ ছাত্রনেতারা জেলায়-জেলায় সফর করেছিলেন। এই ইতিহাসগুলো অনুম্মোচিত রয়ে গিয়েছিল। আজ সেগুলো ধীরে ধীরে উম্মোচিত হচ্ছে।’

চট্টগ্রামের বইমেলার আঙ্গিক আরও বৃহত্তর করার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘ঢাকা এবং পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, আগরতলা, আসামসহ আরও দেশের গুণীজন ও প্রকাশকদের ডেকে আনতে হবে। ইংল্যান্ডে ইংরেজি ভাষায় যখন কোন বই প্রকাশ হয়, সেটি একইসঙ্গে নিউইয়র্ক, অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডেও হয়। কিন্তু আমাদের দেশে সেটি হয় না। কলকাতায় একটি বই প্রকাশিত হলে সেটি একইসাথে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামে একসঙ্গে হয় না।’

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বইমেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কাউন্সিলর নিছার উদ্দিন আহমেদ, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম এবং সম্মাননা পাওয়া নাট্যজন শিশির দত্ত ও কবি আবসার হাবীব।

এবার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ১৬ জনকে একুশে স্মারক সম্মাননা পদক ও সাহিত্য পুরস্কার দিয়েছে।

খখ/মো মি

আগেচসিকের একুশে স্মারক সম্মাননা পদক ও সাহিত্য পুরস্কার পেলেন ১৬ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি
পরে“পবিত্র রমজানে নিত্যপণ্যের সংকট হবে না”-প্রধানমন্ত্রী