খাসখবর চট্টগ্রাম ডেস্ক: চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালি থানাধীন টেরিবাজারের কাপড় ব্যবসায়ীর সোয়া ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক দোকান কর্মচারী ও তার সঙ্গীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, আড়াই লাখ টাকায় একটি তক্ষক কিনে দ্বিগুণ দামে বিক্রির প্রলোভনে পড়ে ওই কর্মচারী দোকানের টাকা আত্মসাৎ করেছিলেন।
গতকাল শুক্রবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার পুকুরিয়া ইউনিয়নের কমিশনার পাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এসময় তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎ করা সাড়ে ৯ লাখ নগদ টাকা এবং ১ লাখ ৬২ হাজার টাকার দু’টি চেক উদ্ধার করেছে কোতোয়ালি থানা পুলিশ।
গ্রেপ্তার এমরানুল হক (২৪) সাতকানিয়া থানার সোনাকানিয়ার দক্ষিণ হাতিয়ারকুল গারাংগিয়া গ্রামের মো. নুরুল কবিরের ছেলে। অন্যজন হলেন, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া থানার পুকুরিয়া গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে মোক্তার আহমদ প্রকাশ রানা বৈদ্য (৪৭)।
পুলিশ জানায়, এমরানুল টেরিবাজারে রাবেতা ক্লথ স্টোরে গত ১০ বছর ধরে কর্মরত ছিল। বিশ্বস্ত কর্মচারী হিসেবে দোকান মালিক কামরুল ইসলাম তাকে টাকা লেনদেনের ভার দেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি এমরানুল দোকান থেকে নগদ ৯ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে টেরিবাজারেই ইসলামী ব্যাংকের শাখায় যান। সঙ্গে একই ব্যাংকের টেরিবাজার ও চকরিয়া শাখার এক লাখ ৩২ হাজার ও ৩০ হাজার টাকার দু’টি আলাদা চেকও নেন। মূলত মালিকের নির্দেশেই এমরানুল হক টাকা ও চেক নিয়ে ব্যাংকে গিয়েছিলেন। রাবেতা ক্লথ স্টোরে যাদের কাছ থেকে মালামাল কেনা হয়, তাদের পাওনা পরিশোধের জন্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দিতে তাকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সে দোকানে ফেরত না এসে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। মালিকপক্ষ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাকে না পেয়ে থানায় অভিযোগ করেন।’
পুলিশ আরও জানায়, তদন্তে নেমে চকরিয়ায় এমরানুলের অবস্থান শনাক্ত করে সেখানে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার গভীর রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এমরানুল পূর্বপরিচিত মোক্তার আহমদ প্রকাশ রানা বৈদ্যের বাড়িতে তার আশ্রয়ে ছিলেন। সেই মোক্তারের আলমারি থেকে নগদ সাড়ে ৯ লাখ টাকা এবং ১ লাখ ৬২ হাজার টাকার দু’টি চেক উদ্ধার করা হয়। বাকি ১৩ হাজার টাকা এমরানুল খরচ করেছেন বলে জানান।
সিএমপির কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার অতনু চক্রবর্তী বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে এমরানুল জানায়, পূর্বপরিচিত মোক্তার আহমদ প্রকাশ রানা বৈদ্য তাকে আড়াই লাখ টাকায় একটি তক্ষক কিনে পাঁচ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেবে বলে জানিয়েছিল। দ্বিগুণ লাভের লোভে পড়ে সে সাড়ে ৯ লাখ টাকা ও দু’টি চেক মোক্তারকে দিয়ে দেয়। আজ (শনিবার) মোক্তার তাকে তক্ষক কিনে দেওয়ার জন্য খাগড়াছড়িতে নিয়ে যাবার কথা ছিল। তবে এমরানুলের দাবি সঠিক কি না, সেটা নিয়ে আরও তদন্ত হবে।’
কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম ওবায়েদুল হক বলেন, আত্মসাৎ করা টাকা এবং চেক নিয়ে দোকান কর্মচারী এমরানুল ও মোক্তার আহমদ প্রকাশ রানা বৈদ্যের বাড়িতে আত্মগোপন করেছিলো। রানা বৈদ্যের যোগসাজশে এমরানুল খাগড়াছড়ি থেকে সরীসৃপ প্রাণী তক্ষক কিনে অবৈধভাবে ব্যবসা করার জন্য মূলত টাকাগুলো আত্মসাৎ করেছিল। মামলা দায়েরের পর তদন্তকারী কর্মকর্তা এমরানুল ও মোক্তার আহমদকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে আত্মসাৎ করা টাকার মধ্যে সাড়ে ৯ লাখ টাকা এবং দুটি চেক উদ্ধার করা হয়।
খখ/মো মি