হাতিরঝিল থেকে জিটিভির সাংবাদিক রাহানুমা সারাহ’র লাশ উদ্ধার

খাসখবর গণমাধ্যম ডেস্ক: রাজধানীর হাতিরঝিলের পানিতে ডুবে রাহানুমা সারাহ (৩২) নামে এক নারী সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি জিটিভির (গাজী টিভি) নিউজ রুম এডিটর ছিলেন।

thai foods

সারাহ রাহানুমা সাত বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন রাহানুমা। তবে সম্প্রতি স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স নিতে চেয়েছিলেন তিনি।

মঙ্গলববার (২৮ আগস্ট) দিবাগত রাত পৌনে ২টার দিকে ওই নারীকে পথচারীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন

সারাহকে হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী মো. সাগর জানান, রাত পৌনে ১টার দিকে হাতিরঝিলের প্রথম ব্রিজের নিচে লেকের পানিতে ভাসমান অবস্থায় ছিলেন তিনি। পাশেই তার ব্যাগ ভাসছিল। পানি থেকে তুলে ওই নারীকে দ্রুত ফরায়েজী হাসপাতালে নেওয়া হয়। তবে সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে চিকিৎসা দেয়নি। পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাগর জানান, সারাহ কিভাবে লেকের পানিতে ডুবে গেছে তা জানতে পারেন নাই।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।

জানা গেছে, বেসরকারি টেলিভিশন জিটিভির নারী সাংবাদিক সারাহ রাহানুমা (৩২) সাত বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন রাহানুমা। তবে সম্প্রতি স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স নিতে চেয়েছিলেন তিনি।

সারাহ রাহানুমা স্বামীর নাম সায়েদ শুভ্র। তাঁরা রাজধানীর কল্যাণপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্ত্রীর মৃত্যু নিয়ে শুভ্র গণমাধ্যমকে বলেছেন, তিনি পানিতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

সায়েদ শুভ্র বলেন, গতকাল রাহানুমা অফিসে গিয়েছিলেন। রাতে বাসায় না ফিরে এক ব্যক্তিকে দিয়ে বাসাভাড়ার টাকা পাঠিয়ে দেন। তিনি তাঁকে ফোন করেন। বলেন, বাসায় না এসে অন্যকে দিয়ে কেন টাকা পাঠিয়েছেন? উত্তরে রাহানুমা বলেন, তিনি ব্যস্ত আছেন। এই বলে ফোন রেখে দেন। দিবাগত রাত তিনটার দিকে সায়েদ শুভ্র খবর পান, রাহানুমা হাতিরঝিল লেকের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছেন। রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজে গিয়ে তিনি রাহানুমার লাশ দেখতে পান।

সায়েদ শুভ্র আরও বলেন, প্রেম করে সাত বছর আগে তাঁরা পরিবারকে না জানিয়ে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে কোনো ঝগড়াও হয়নি। তবে বেশ কিছুদিন আগে থেকে রাহানুমা আলাদা হয়ে যেতে চেয়েছিলেন। তাঁরা কাজি অফিসে গিয়ে বিবাহবিচ্ছেদও সম্পন্ন করতে চেয়েছিলেন। তবে দেশের পরিস্থিতির কারণে তা আর করা হয়ে ওঠেনি।

এ দিকে মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগে ফেসবুক স্ট্যাটাসে আত্মহত্যার কথা লিখেছিলেন সারা। সারাহ ফেসবুক প্রোফাইল ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে তোলা ছবি ১১ ঘণ্টা আগে শেয়ার দিয়েছেন তিনি। আত্মহত্যার আগে তিনি তাঁর ফেসবুক প্রোফাইলে বন্ধু ফাহিম ফয়সাল ও তাঁর স্বপ্নের কথাগুলো তুলে ধরেছেন। স্বপ্ন পূরণে উভয়ের পরিকল্পনাও ছিল অসংখ্য। সেগুলোর কথাও তুলে ধরেছেন রাহানুমা। কিন্তু স্বপ্নগলো পূরণ হয়নি কী কারণে তা তিনি উল্লেখ করেননি।

বন্ধুর প্রশংসা করে তার উদ্দেশ্যে লিখেছেন, ‘তোমার মতো বন্ধু থাকা অসাধারণ ব্যাপার। সবার ভাগ্যেও তা জোটে না। আমি জানি আমাদের অনেক স্বপ্ন। কিন্তু আমাদের স্বপ্নগুলো আমরা পূরণ করতে পারিনি। এ কথা বলার পর রাহানুমা তাঁর বন্ধুর মঙ্গল কামনা করে জীবনের সব ক্ষেত্রে সফলতা কামনা করে বলেছেন, আল্লাহ তোমার ভালো করুন।

১২ ঘণ্টা আগে ফেসবুকে দেওয়া প্রথম পোস্টে সারাহ রাহানুমা লিখেন, ‘জীবন্মৃত হয়ে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই ভালো।’

তবে সারাহ’র মৃত্যুর কারণ নিয়ে পুলিশ বলেছে, এটা আত্মহত্যা নাকি হত্যা, তা লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই বলা যাবে।

মৃত নারী সাংবাদিক রাহানুমার বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায়। তাঁরা দুই বোন। দুই বোনের মধ্যে রাহানুমা ছিল ছোট। রাহানুমার বাবার নাম বখতিয়ার শিকদার।

খখ/মো মি

আগে“ড. ইউনূস বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা রাখেন”-সৌদি আরব
পরেজামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের আদেশ প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি