খাসখবর চট্টগ্রাম ডেস্ক : করোনার সেকেন্ড ওয়েভ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার কঠোর বিধিনিষেধ ঘোষনা করলেও ব্যবসায়ীদের চাপের মুখে খুলে দিতে হল শপিংমল ও দোকানপাট।
ব্যবসায়ীরা মাস্ক পড়া, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শপিংমল খোলা ও দোকানপাট চালু করলেও প্রথমদিনই তাদের সেই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন নেই বলে জানিয়েছেন ক্যাব।
দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম নগর ও বিভাগীয় নেতৃবৃন্দরা এক বিবৃতিতে এমন অভিযোগ করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যবসায়ীদের জীবিকা বাঁচানোর “রমজানে একমাস ব্যবসা করবো, পুরো বছর বসে থাকবো”-এ শ্লোগনকে সফল করতে ক্রেতারা যদি ঈদের বাজার হুমড়ি খেয়ে পড়েন, মৃত্যুপুরী শপিংমল ও দোকানে ভিড় করেন- তাহলে আপনি ও আপনার পরিবারের জন্য করোনা কিনে আনার মতো বিপর্যয় হবে।
আজ সোমবার (২৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গণমাধ্যমে প্রেরিত বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দরা বলেন, করোনা যেহেতু ছোঁয়াছে এবং সংক্রমণ বাড়ার উৎসগুলির মধ্যে গণপরিবহন, শপিংমল ও মসজিদসহ জনসমাগমকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সেহেতু নিজেকে এবং নিজের পরিবারকে বাঁচার জন্য এসমস্ত ঘটনা এডিয়ে চলার বিকল্প নাই। ব্যবসায়ীদের জীবিকা বাঁচানোর জন্য আপনি যদি বেঁচে থাকেন তাহলে পরবর্তীতে সেটা করতে পারবেন। জেনে শুনে নিজ ও পরিবারের জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনা বুদ্ধিমানের পরিচয় হবে না।
ক্যাব নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তীদের ভারতে করোনা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অক্সিজেনের জন্য পুরো ভারত জুড়ে হাহাকার এবং মৃত্যুর মিছিল। সোসাল মিডিয়া ও টিভি, পত্র-পত্রিকার কল্যানে আমরা এ সমস্ত সংবাদ শুনলেও আমলে না নেবার পরিনতি ভারতের মতো হবে।
নেতৃবৃন্দরা বলেন করোনা যেহেতু দ্রুত ছড়াচ্ছে এবং অদৃশ্য শত্রু। করোনার রোগী সনাক্ত ও চিহ্নিত করা কঠিন। যে পরিবারের একজন আক্রান্ত হয়েছে শুধুমাত্র সেই পরিবারের আহাজারী ও অবর্ননীয় দুঃখকষ্ট শুনার মতো কারো নেই। করোনায় জীবিকা বাঁচাতে গিয়ে অনেক পরিবার চিকিৎসা ও ওষুধের খরচ যোগাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে।
বিগত বছরগুলির অভিজ্ঞতা আমাদের সকলের জানা, হাসপাতালে বেড় নাই, চিকিৎসা নাই, ওষুধ নাই, অক্সিজেন নাই। মানুষ বিনা চিকিৎসায় রাস্তায় রাস্তায় অ্যাম্বুলেন্সে মৃত্যুর প্রহর গুনেছে।
করোনায় মৃত্যবরনকারী অনেক লোকজন ঠিকমতো জানাজা পড়া ও কবর দেয়া সম্ভব হয়নি। তাই এবারও সেধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি যেন হতে না হয় সে জন্য নিজেকে সতর্ক করা ছাড়া বিকল্প নাই।
নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন গণপরিবহন মালিকরা যেভাবে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের কথা বলে ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি করে দ্বিগুন ভাড়া আদায় করে স্বাস্থ্যবিধি ও অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করে নি।
সেখানে সরকারী আইন শৃংখলা বাহিনী ও প্রশাসন হাতে গুনা কয়েকটি দায়সারা ফটোসেশনের অভিযান পরিচালনা করেছেন, একই ভাবে ব্যবসায়ীদের শপিং মলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে প্রশাসন কার্যকর উদ্যোগ নিবেন সে আশা কতটুকু পুরণ হবে তা নিয়ে সন্দিহান।
তাই নাগরিক হিসাবে করোনা থেকে নিজ ও পরিবারের সদস্যদেরকে বাঁচাতে নিজের সতর্কতা ও নিরাপত্তা নিজেকে নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নাই।
বিবৃতিতে এসব জনসচেতনতামূলক মন্তব্য করেছেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম ও ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান।
খখ/প্রিন্স