খাসখবর চট্টগ্রাম : লকডাউন এবং রমজানকালীন সময়ে জনগনের অতি অত্যাবশ্যকীয় একটি উপাদান হচ্ছে সুপেয় পানি। আর চট্টগ্রাম নগরবাসীর মাঝে সে সুপেয় পানি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হচ্ছে ওয়াসা নামক অন্যতম সেবা সংস্থাটি।
আজ রবিবার (২ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মন্তব্যটি করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
নগরবাসীকে শুধু আশ্বাস না দিয়ে সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ওয়াসা এমডিকে আহবান জানিয়েছেন খোরশেদ আলম সুজন।
এ সময় তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করার পর পরই ওয়াসার পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে শুরু করে।
একের পর এক বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্প গ্রহণ এবং প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের মাধ্যমে নগরবাসীর মাঝে সুপেয় পানি পৌঁছে দেওয়াই ছিল এর মূল লক্ষ্য।
তারপরও কেন যে কি কারণে নগরবাসী ওয়াসার সুপেয় পানি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তা অনেকের মতোই আমাদেরও অজানা।
তাহলে কোথায় এতো হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে সে প্রশ্ন থেকেই যায়। প্রতিদিনই নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রাহকদের অনবরত টেলিফোন আসে ওয়াসার পানি সরবরাহের অনিয়ম বিষয়ে।
আর এসব বিষয়ে ওয়াসার এমডিকে প্রশ্ন করা হলে তিনি টেকনিক্যাল সমস্যা অথবা সঞ্চালন লাইনে ত্রুটি বলে দায় সারতে চায়।
আমরা নাগরিক উদ্যোগের পক্ষ থেকে সুস্পষ্টভাবে ওয়াসাকে বলে দিতে চাই যে, তারা নগরবাসীকে সুপেয় পানি সরবরাহ দিতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। এর দায় অবশ্যই তাদেরকে গ্রহণ করতে হবে।
তাছাড়া ওয়াসার অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা সরকার বিরোধী কোন মহল সরকারের সুফলগুলো জনগনকে ভোগ করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্ঠি করছে কি-না তা খতিয়ে দেখার জন্য ওয়াসার এমডি’র নিকট আহবান জানান সুজন।
সুজন বলেন, একে তো উত্তপ্ত গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ তার উপর পবিত্র রমজান মাসেও পানির জন্য হাহাকার নগরবাসীর মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে। নগরীর বৃহত্তর উত্তর আগ্রাবাদ, রঙ্গীপাড়া, সোনালী আবাসিক এলাকা, রামপুর, হালিশহরসহ বিভিন্ন এলাকায় পান এবং ব্যবহার অযোগ্য নোনা ও আয়রন মিশ্রিত পানি সরবরাহ করা হচ্ছে।
এ রমজান মাসেও সপ্তাহে একদিন কি দুইদিন পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। আর পানির চাপও নগন্য। ঘন্টার পর ঘন্টা পানির কল ছেড়ে রাখলেও কাংখিত পানির দেখা পাচ্ছেন না নগরবাসী। এ অবস্থা থেকে আমরা মুক্তি চাই।
অন্যদিকে নগরীর সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় ওয়াসার অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ম্যানেজ করে গেইট বাল্বটি বন্ধ করে রাখা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে। যার ফলে পতেঙ্গাসহ বিপুল এলাকার গ্রাহক ওয়াসার পানি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
রাত্রে অসাধু পানি ব্যবসায়ীরা গেইট বাল্ব খুলে সেই পানি ছোট ছোট ট্যাংকে ভরে ঐ এলাকার গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করে। আমরা নাগরিক উদ্যোগের পক্ষ থেকে ওয়াসাকে অভিযোগ জানানোর পর সংস্থাটির নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট এসে অভিযোগটির সত্যতা পান এবং হাতেনাতে অসাধু পানি ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।
এখনো সংঘবদ্ধ চক্রটি পূণরায় তাদের অসাধু কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগের অন্ত নেই। বৃহৎ প্রকল্পের কারণে ওয়াসার পানির উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে ঠিক কিন্তু বিতরণ ব্যবস্থার অদক্ষতার কারণে নগরবাসী তার কাংখিত সুফল পাচ্ছে না বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস সুজনের।
খখ/প্রিন্স