খাসখবর আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্বেও বিশ্বের ৮০টিরও অধিক দেশকে কোভিড দিয়ে ভারত সহযোগিতা করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাইসিনা সংলাপ ২০২১ এর উদ্বোধনী অধিবেশনে বক্তব্য প্রদানকালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, মানবসভ্যতার ইতিহাসের এক সন্ধিক্ষণে রাইসিনা সংলাপের এই সংস্করণটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে। একটি বৈশ্বিক মহামারী এক বছরের বেশি সময় ধরে পৃথিবীজুড়ে তাণ্ডব চালাচ্ছে।
সর্বশেষ এক শতাব্দী আগে এ ধরণের বৈশ্বিক মহামারী হয়েছিল। যদিও মানবসভ্যতা তখন থেকেই অনেকগুলি সংক্রামক রােগের মুখােমুখি হযেছে, কিন্তু বিশ্ব আজ কোভিড-১৯ মহামারীটি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত নয়।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে, আমাদের সমাজের সকল বিজ্ঞজনেরাই এই মহামারীটি মােকাবিলায় নিয়ােজিত। বিশ্বের সকল রাষ্ট্রব্যবস্থা তাদের সমস্ত পর্যায়ে এই মহামারীটি নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিহত করার চেষ্টা করছে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থার উত্থানকে অনিবার্য করেছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির পরের কয়েক দশক ধরে অনেকগুলি কাঠামাে এবং প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হয়েছিল, তবে দু’টি যুদ্ধের ছায়ায় সেগুলির লক্ষ্য ছিল একটি মাত্র প্রশ্নের উত্তর খোঁজা- তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কীভাবে প্রতিরােধ করা যায়?
আজ আমি আপনাদের বলতে চাই যে, এটি ছিল ভুল প্রশ্ন। ফলে গৃহীত সমস্ত পদক্ষেপ ছিল অন্তর্নিহিত কারণগুলিকে শনাক্ত না করে রােগীর চিকিৎসা করার মতাে।
অন্যভাবে বলতে গেলে, গৃহীত সমস্ত পদক্ষেপ ছিল পরবর্তী যুদ্ধ নয় বরং শেষ যুদ্ধটি প্রতিরােধ করার জন্য। প্রকৃতপক্ষে, মানবতা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের মুখােমুখি না হলেও, মানুষের জীবনে সহিংসতার হুমকি কমেনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কোভিড -১৯ মহামারী আমাদের বিশ্বব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের এবং আমাদের নতুন করে চিন্তা করার একটি সুযােগ দিয়েছে। আমাদের অবশ্যই এমন একটি ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে যা আজকের সমস্যা এবং আগামীর চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান করবে।
কেবল আমাদের সীমার এপারে যারা রয়েছেন তাদের কথা না ভেবে আমাদের অবশ্যই সমগ্র মানবতার কথা চিন্তা করতে হবে। সামগ্রিকভাবে মানবতা আমাদের চিন্তাভাবনা এবং কর্মের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে হবে।
তিনি বলেন, এই মহামারী চলাকালীন নিজস্ব উপাযে এবং সীমিত সংস্থানের মধ্যেও আমরা ভারতে আলােচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আমরা নিজেদের ১.৩ বিলিয়ন নাগরিককে মহামারী থেকে রক্ষা করার চেষ্টা করেছি। একই সাথে আমরা অন্যদের মহামারী মােকাবিলায় সমর্থন করার চেষ্টা করেছি।
আমাদের আশেপাশে, প্রতিরােধে আমাদের সমন্বিত আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়াকে উৎসাহিত করেছি। গত বছর আমরা দেড় শতাধিক দেশের সাথে ওষুধ এবং সুরক্ষা সরঞ্জাম ভাগ করে নিযেছি।
আমরা বুঝতে পেরেছি যে, পাসপাের্টের রঙ নির্বিশেষে আমরা প্রত্যেকেই এ মহামারী থেকে বেরিয়ে না আসা পর্যন্ত মানবজাতি মহামারীকে পরাভূত করবে না।
এ কারণেই, এই বছর অনেক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্তেও আমরা ৮০টিরও বেশি দেশে ভ্যাকসিন আমরা সংকট সরবরাহ করেছি। আমরা জানি যে, বিশাল চাহিদার বিপরীতে সরবরাহগুলি পরিমিত ছিল। আমরা জানি যে, পুরাে মানব জাতিকে টিকা দিতে অনেক সময় লাগবে।
অনুষ্ঠানে রুয়ান্ডার রাষ্ট্রপতি এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী এবং ইউরােপীয় কাউন্সিলের রাষ্ট্রপতি ভার্চুয়ালী অংশগ্রহণ করেন।
খখ/প্রিন্স