খাসখবর সাহিত্য ডেস্ক : সমকালীন বাংলা কবিতার প্রবীণতম কবি শঙ্খ ঘোষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ভাইরাস আক্রান্ত হয়ে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন।
মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) রাতে আচমকাই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। বুধবার (২১ এপ্রিল) সকালে তাঁকে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে চলে গেলেন কবি। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ভেন্টিলেটর খুলে নেওয়া হয়।
১৯৩২ সালে বাংলাদেশের চাঁদপুরে জন্মগ্রহণকারী কবি শঙ্খ ঘোষ ছিলেন জীবনানন্দ-পরবর্তী বাংলা কবিতার এই পঞ্চপাণ্ডবের একজন। শক্তি-সুনীল-শঙ্খ-উৎপল-বিনয়, এই পঞ্চকবি’র বাকি চার জন চলে গিয়েছিলেন আগেই। তিনিও ৮৯ বছর বয়সে চিরবিদায় নিলেন।
দীর্ঘ কর্মজীবনে নানা ভূমিকায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানে অধ্যাপনাও করেছেন। ইউনিভার্সিটি অব আইওয়ায় ‘রাইটার্স ওয়ার্কশপ’-এও শামিল হন। বছর দুয়েক আগে ‘মাটি’ নামের একটি কবিতায় কেন্দ্রীয় সরকারের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধেও গর্জে উঠেছিলেন তিনি।
বাংলা কবিতার জগতে শঙ্খ ঘোষের অবদান কিংবদন্তিপ্রতিম। ‘দিনগুলি রাতগুলি’, ‘বাবরের প্রার্থনা’, ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে’, ‘গান্ধর্ব কবিতাগুচ্ছ’ তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ। রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তাঁর প্রসিদ্ধি সর্বজনবিদিত।
তাঁর মৃত্যুতে আধুনিক বাংলা কবিতার শুদ্ধতম ধারায় ছেদ পড়ল। বাংলা সাহিত্য হারালো আপাদমস্তক একজন কবিকে, যিনি কবি ছাড়া আর কিছু ছিলেন না। কাব্যচর্চাই ছিল তার জীবনের একমাত্র ধ্যান-জ্ঞান ও সাধনা।
শঙ্খ ঘোষের আসল নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। তার বাবা মণীন্দ্রকুমার ঘোষ এবং মা অমলা ঘোষ। ১৯৩২ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের বর্তমান চাঁদপুর জেলায় তাঁর জন্ম। বংশানুক্রমিকভাবে পৈতৃক বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়ায়।
তবে শঙ্খ ঘোষ বড় হয়েছেন পাবনায়। বাবার কর্মস্থল হওয়ায় তিনি বেশ কয়েক বছর পাবনায় অবস্থান করেন এবং সেখানকার চন্দ্রপ্রভা বিদ্যাপীঠ থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন।
১৯৫১ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
খখ/মো মি