খাসখবর আন্তর্জাতিক ডেস্ক : শেখ পর্যন্ত দিদি কী মসনদ হারাচ্ছেন? এমন প্রশ্ন এখন পশ্চিমবঙ্গের মানুষের অনেকের কাছে।
চতুর্থ দফার বিধান সভার নির্বাচনে তৃনমুল কংগ্রেস’র ‘নির্বাচনী পরামর্শে’র ফাঁস হওয়া অডিও দিদির (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মসনদ হারানোর আশঙ্কা আরো জোরালো হয়ে দেখা দিয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল বিজেপি মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতা হারানোর বিষয়টি স্পট দেখতে পারছেন বলেন নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের অনেক নেতা মনে করছেন। তবে অষ্টম দফা নির্বাচন শেষে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পরই জানা যাবে পশ্চিমবঙ্গের মসনদে কে থাকছেন।
শনিবার (১০ এপ্রিল) ভারতের পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভার চতুর্থ দফার ভোট গ্রহণ হয়। চতুর্থ দফার ভোটের মধ্যেই প্রদেশের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল তৃণমূল কংগ্রেসের এক কর্মকর্তার ফাঁস হওয়া একটি অডিও ঘিরে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
তৃণমূলের নিয়োগকৃত নির্বাচনী পরামর্শক প্রশান্ত কিশোরের (পিকে) ফাঁস হওয়া অডিওতে প্রদেশটিতে ক্ষমতায় দলবলের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।
অডিওটি ফাঁস হওয়ার পরই বিরোধীদল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষমতার চেয়ার হারানোর অবসান দেখছেন।
ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলো বলছে, শনিবার (১০এপ্রিল) চতুর্থ দফার ভোটের দিন পিকের অডিও প্রকাশ হয়। জানা গেছে, অডিওটি বিজেপির আইটি বিভাগের প্রধান অমিত মালব্য প্রকাশ করেছেন।
অডিওতে পিকের সঙ্গে সাংবাদিকদের কথোপকথন চলছে। আর তারই একাংশ তুলে ধরে টুইটে মন্তব্য করেছেন বিজেপির অমিত মালব্য।
পিকের ফাঁস হওয়া অডিওতে বলতে শোনা যাচ্ছে, এবার পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হিন্দুত্ববাদ, মেরুকরণের রাজনীতি এবং অবাঙালি-দলিত-মতুয়া ভোট। হিন্দুদের ৫০-৫৫ শতাংশ ভোট পড়বে বিজেপিতে। এছাড়া মতুয়াদের দুই তৃতীয়াংশ এবং দলিত ভোটও চলে যাচ্ছে বিজেপিতে।
মোদি খুব জনপ্রিয় রাজ্যে। ভোট থাকলে তার নামেই আছে, ভোট থাকলে হিন্দুত্বের নামে রয়েছে। মেরুকরণ, মোদি, হিন্দিভাষী, দলিত এগুলোই ফ্যাক্টর। কে গেল,আর কে এলো, তা এখানে ধর্ত্যব্যের বিষয়ই নয়। নরেন্দ্র মোদি এখানে জনপ্রিয়।
নির্বাচন ঘিরে রাজ্যটিতে এবার কোন দল ক্ষমতায় যেতে পারে, কোন দলের কেমন সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে পারে- সেই চিন্তা-ভাবনা থেকে ভোটারদের অবস্থান জানার জন্য এক সমীক্ষা চালায় তৃণমূল কংগ্রেসের নির্বাচনী পরামর্শক প্রশান্ত কিশোরের প্রতিষ্ঠান।
সমীক্ষায় অধিকাংশ মানুষ বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন- এমন প্রশ্নের ব্যাখ্যায় পিকে বলেন, যারা বিজেপি’কে ভোট দেবেন তারা আগেই বলেছেন। এছাড়া বামদের ১০-১৫ শতাংশ ভোটদাতা, তাদের দুই-তৃতীয়াংশও মনে করছেন বিজেপি সরকার গড়তে যাচ্ছে।
পিকের মতে, রাজ্যের বাম ভোটারদের কাছে মমতাকে আসনচ্যুত করাই তাদের মুখ্য বিষয়। বামদের মতে, বিজেপি ক্ষমতায় আসলে তাদের সুদিন আসবে।
উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে এবার মোট আট দফায় বিধানসভার নির্বাচনের ভোট গ্রহণ চলছে। প্রথম দফায় গত ২৭ মার্চ ৩০টি, দ্বিতীয় দফায় ১লা এপ্রিল ৩০টি এবং তৃতীয় দফায় ৬ এপ্রিল ৩১টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
এর পর ১০ এপ্রিল দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ার জেলায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম দফার নির্বাচনে ভোট পড়েছিল ৮৪.৬৩ শতাংশ, দ্বিতীয় দফায় ৮৬.১১ শতাংশ, তৃতীয় দফায় ৮৪.৬১ শতাংশ।
চতুর্থ দফায় ভোট পড়েছে ৭৬ দশমিক ১৬ শতাংশ। আগামী ১৭ এপ্রিল রাজ্যটিতে পঞ্চম দফার ভোট গ্রহণ হবে। শেষপর্যন্ত দেখা যাক পশ্চিমবঙ্গের মসনদে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) থাকে,নাকি অন্য কেউ আসে।
খখ/মো মি