খাসখবর চট্টগ্রাম ডেস্ক: আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনামলে চট্টগ্রাম নগরী ও জেলায় ৭৩২টি আগ্নেয়াস্ত্র ইস্যু করা হয়েছিল। সেসব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) এর মধ্যে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল সরকার।
চট্টগ্রামে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৬০১টি আগ্নেয়াস্ত্র জমা পড়লেও এখনও ১৩১টি জমা পড়েনি। যারা অস্ত্র জমা দেননি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) ও জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সাড়ে ১৫ বছরে সিএমপির ১৬ থানায় ৪৫৪টি এবং জেলার ১৫ থানায় ২৭৮টি আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ইস্যু করা হয়। এরমধ্যে সিএমপিতে বৈধ অস্ত্র জমা পড়েছে ৩৬১টি আর জমা পড়েনি ৯৩টি। অন্যদিকে জেলায় জমা পড়েছে ২৪০টি অস্ত্র আর জমা পড়েনি ৩৮টি অস্ত্র।
সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, কোতোয়ালীতে ৫৩টি, বাকলিয়ায় ৫টি, সদরঘাটে ২১টি, চকবাজারে ৩১টি, চান্দগাঁওয়ে ২৫টি, পাঁচলাইশে ৯৫টি, খুলশীতে ৫০টি, বায়েজিদ বোস্তামিতে ৮টি, ডবলমুরিংয়ে ১৭টি, হালিশহরে ১৭টি, পাহাড়তলীতে ৯টি, আকবরশাহতে ১টি, বন্দরে ১২টি, ইপিজেডে ৭টি, পতেঙ্গায় ৩টি এবং কর্ণফুলী থানায় ৭টি অস্ত্র জমা পড়েছে। অস্ত্রের পাশাপাশি এসব থানায় জমা পড়েছে ১৯ হাজার ৬২৬ রাউন্ড গুলি।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (এডিসি-মিডিয়া) কাজী মো. তারেক আজিজ জানান, সিএমপিতে অনেক অস্ত্রই জমা পড়েছে। যারা অস্ত্র জমা দেননি তাদের তালিকা করে পরবর্তী সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, খুলশী থানায় বিভিন্ন জেলার ২০টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র আছে। নোয়াখালী জেলার লাইসেন্স করা দুটি অস্ত্র জমা হয়েছে ডবলমুরিং থানায়। পাহাড়তলী থানায় লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) উত্তরা পশ্চিম থানায় এবং আরেকটি সিএমপির পাঁচলাইশ থানায় জমা আছে।
এছাড়া আকবরশাহ থানার লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র সীতাকুণ্ড থানায় এবং সীতাকুণ্ড থানার লাইসেন্স করা একটি অস্ত্র আকবরশাহ থানায় জমা হয়েছে। কর্ণফুলী থানার দুইটি অস্ত্র ডবলমুরিং থানায় ও একটি অস্ত্র খুলশী থানায় জমা হয়েছে।
অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) থেকে যৌথ অভিযান শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দেওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করার ঘোষণা আসার পর মঙ্গলবার রাত ১২টার মধ্যে এসব অস্ত্র জমা দিতে বলা হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা না দিলে এসব অস্ত্রকেও অবৈধ ঘোষণা করা হবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয় ।
২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ক্ষমতায় ছিল আওয়ামী লীগ। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। পরে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সরকার পতনের পর দেশের বিভিন্ন থানার পাশাপাশি চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। অনেক থানা থেকে লুট করা হয় অস্ত্র।
খখ/মো মি